আজকের ঋণাত্মকতা, সাথে প্রগতি

রাগ দেখানো আর উত্তেজিত হয়ে যাওয়া, রেগে যাওয়া আজ নতুন এক বিনোদন,
অন্যের শাস্তি প্রার্থনা আর অন্যকে শাস্তি, কষ্ট ইত্যাদি দেওয়ার মাধ্যমে জীবনে আনন্দের সংযোজন,
ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ আর ক্রোধ নামক এক আবেগের বশবর্তী কিছু কর্ম সম্পাদন,
তার মধ্যে বিনোদন, অন্তরাত্মার শান্তি আর চরিত্রের সংজ্ঞায়ন,

বুদ্ধিমান ও বিশ্বজয়ী প্রাণী আজ জন্তুবৃত্তি ফিরিয়ে আনছে,
আবেগের কারসাজির মাধ্যমে বন্যের নিয়ম আপন করছে,
নৈতিকতা আর পুঁথিগত নয়, প্রত্যেকের নিজস্ব সংস্করণ রয়েছে,
সুপ্ত যা ছিল দীর্ঘকাল, তা ক্রমাগত প্রকাশ্যে আসছে,

নীতি আজ এক বিশেষ হাতিয়ার, টিকে থাকার ঢাল মাত্র,
মাঝে মধ্যে ব্যক্তিবিশেষে তরোয়ালের রূপ পরিবর্তন করে মাত্র,
সুপ্ত ক্রোধ বহিঃপ্রকাশে বীরত্ব, উষ্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে আনন্দ,
প্রত্যেক পর্যায়ে যোগ্যতা কেন্দ্রীক প্রশ্ন, হজমে সমস্যা হলে তার নাম দুর্নীতি মাত্র,

ছোট করে, অশালীন শব্দ প্রয়োগে, বিনোদন জমে ওঠে,
শালীনতা আজ পিছিয়ে, আধুনিকের সাথে যুদ্ধে মজে,
বড়ো ব্যক্তিত্ব সবাই আজ, সবাই স্বপ্ন দেখে,
বোধয় অতীতে দেখতো না মানুষ স্বপ্ন, উচ্চাভিলাষা ছিল বোধয় শব্দকোষে বেশ বেঁটে,

সময়ের সাথে উচ্চতা বেড়েছে তার, ওই গায়ে গতরে বড়ো হয়েছে,
ক্ষমতা চিমটে খানেক হলেও জাহিরে তা অন্তত দশ গুন বেড়েছে,
হিংসে কেন্দ্রীক বিনোদন আর অশালীনতার সামাজিক স্বীকৃতি মিলেছে,
প্রেক্ষাপটে নতুন সমাজ, দেখানসুলভতা তুঙ্গে,মাঝে একটু ভারসাম্য খোঁজা চলছে,

শব্দকোষ যার বড়ো, কিন্তু প্রয়োগে থাকে সীমিত,
আজ তারা নগন্য, ক্ষমতাহীন, যারা একদা হতেন মানের দ্বারা পূজিত,
অন্যের কষ্টে আন্তরিক শান্তি, কারো পেটানি খাওয়াতে ভিডিও ভাইরালের অশান্তি,
খ্যাতি প্রিয় মানুষ সবাই, তারই নানান মাধ্যম খোঁজা আর কি,

সম্মান দেওয়া মেপে, কিন্তু নিজের একটু বেশি জুটলে ভালো হয়,
কাজটা একটু কম করে, বেতনটা বাড়লে বেশ ভালো হয়,
চাকরি করা চাকুরেরা বেশি স্বাবলম্বী হিসেবে গন্যিত এসমাজে হয়,
চাকরিরত চাকুরেরা নিজেদের কেমনে চাকর বলে আর পরিচয় দেয়,

তাই চাকরদের অভিমান জন্মেছে, জন্মেছে আত্মহংকার,
বাকিরা কেউ ঠিক বা বেঠিক হলেও নিজের ভুল অস্তিত্ব হারায় হাজার,
দীর্ঘদিনের অভ্যেসে বাকি শ্রেণী সম্প্রদায় সব লুপ্ত,
সমাজে আজ যোগ্য খালি চাকর, সরকারির সাথে বেসরকারিকরণ খালি এক সংযোগ মাত্র,

ঋণাত্মক আবেগের বহিঃপ্রকাশই একমাত্র নিজ অস্তিত্বের পরিচয় বহন করে,
নইলে তারা সমাজের মাঝে বিলুপ্তপ্রায়ের তকমালাভ করে,
শব্দ খরচ নিজে না করলে গভীর তদন্ত চলে,
সামাজিক গোয়েন্দারা আড্ডায় তাদের গবেষণা ও সংগ্রহীত তথ্য তুলে ধরে,

অর্থনীতি, চাকরি থেকে কার বাড়িতে কি রান্না,
শুধু পেশা নয় তার সাথে কার নামে কত অর্থ সঙ্গে সোনাদানা,
গুরুত্ব যাচাই হয়, বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য পুনর্যাচাইয়ের কাজ চলে,
এসমস্তের মাঝে একাংশ, নিজেদের দুর্বল, ব্যর্থ আর অসমর্থ মনে করে,

সমাজমাধ্যমে অনুপ্রেরণামূলক বিষয়বস্তুর আজ বিপুল চাহিদা,
দার্শনিক বক্তব্য ভাগ করার সাথে, কি জানি কি প্রমান করার চাহিদা,
চারপাশের সাথে জুড়লে মনে হবে, চাকুরেরা বেশ সুখী, আর পায় একমাত্র তারাই যারা ভাগ্যে বেশ বলী,
দেওয়াকেন্দ্রিক সমাজ, সম্পর্ক সব উপেক্ষিত, তাই সম্পদের অভাবে চলছে মানুষ বলি,

ঋণাত্মক আবেগ ত্যাগ নয়, ছড়িয়ে দেওয়াটাই নতুন প্রবণতা,
সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগটাই আসল, অন্যের আবেগের নেই গন্যতা,
নিজের নিজের প্রাপ্য খুঁজলে সর্বদাই বিশৃঙ্খলা বেশি ছড়ায়, সংখ্যায় খুব কম মানুষ হয় সুখী,
অন্যের প্রাপ্য উদ্বাস্তু নয়, ওটার প্রতি সচেতনতাই একমাত্র মাধ্যম যার ফলাফল বিশৃঙ্খলাহীন প্রগতি। 

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s