বিদ্বেষ

ছোট করে বড়ো হওয়া নাকি সমাজের অভ্যেস,
উন্নতি দেখতে পারে না মানুষ, রাস্তার ওপর প্রশ্ন ওঠে, বাড়ে ক্লেশ,
সামাজিক আমরা নাকি মানবিকতায় পরিপূর্ণ,
প্রগতি পছন্দ মানুষ আমরা, তবু চারিদিক সাদা কালো বিবর্ণ,

অসহযোগ আন্দোলনকে স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যম করেছিলাম,
ব্রিটিশদের চলে যাওয়ার পরেও অসহযোগ, বনধ, বলি এখন আমরা কাদের গোলাম?
বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো ওরা, উস্কেছিলো কখনো ধর্ম, কখনো জাতির নামে,
আজও কেন দাঙ্গা, বিভেদ, ইংরেজরা দেশ ছেড়ে গেছে সেই কোন কালে,

উন্নতি, প্রগতি ও সম্প্রীতি দেখে ভয় পেয়েছিলো ওরা,
তাই তো সেদিন ভাঙতে চেয়েছিলো, তখন সংখ্যালঘু ছিল যে ওরা,
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, যা হাতের কাছে এসেছে তাই দিয়ে বিভেদ ও বিবাদের জন্ম দিয়ে গেছে ওরা,
আঁধার কোনাতে ঈশ্বর পর্যন্ত ভয় পান, সাহিত্যে এতটাই চালকের তকমা পেতে অভ্যস্ত ছিল ওরা,

কিন্তু আজ যে ওরা দেশ ছেড়েছে, নাকি সবটাই খাতায় কলমে,
চিন্তাজগতে আজও ইংরেজরা রাজত্ব করে এখানে,
লুন্ঠন, ছোট করা ও দমন করার প্রবৃত্তি,
এতো নয় সাধারণ স্বদেশীয় প্রবৃত্তি,

ইতিহাসের পাতায় সমৃদ্ধ দেশীয় ঐকতা ও সম্প্রীতি,
বাণিজ্যে দেশ এগিয়ে ছিল, স্বর্ণ তুল্য ছিল স্বীকৃতি,
যে ঘটনাই ঘটুক না কেন আজও একদল ওদের মতো দিয়ে চলেছে উস্কানি,
মানুষ লড়ছে, অশালীনতা গায়ে মাখছে নামে সভ্যতা ও সংস্কৃতি,

দুশো বছরের পরাধীনতা গোলামীর আনন্দ উপভোগ করিয়েছে,
মিথ্যে অভাব সৃষ্টি করে সমৃদ্ধির স্বীকৃতি কুড়িয়েছে,
নীতিগুলো পাল্টায়নি, বিনোদন চরম মাত্রায় রয়েছে,
নিজ চিন্তা ও আবেগের চেয়ে পারিপার্শ্বিক ও বাকি সবাই বেশি গুরুত্ব কামিয়েছে,

আজও ধর্মে বিধর্মে দাঙ্গা হয়, নিজ দ্বারা নির্বাচিত সরকারের সাথেই অসহযোগ চলে,
বলা বাহুল্য, ইতিহাসের নেশাতুর চোখ অপ্রীতিকর পরিণামের সাক্ষ্য বহন করে,
নিজ দ্বারা নির্বাচিত সরকারের কর্মে অংশগ্রহণের ইচ্ছে নেই, তা নাকি নর্দমাতুল্য,
সমাজের সমস্যা, পদপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্বদের জানালে, আদৌ কি হয় কাদা ছেটানো?,

ইচ্ছে থেকে কর্মে যদি কিছু বাস্তবায়ন ঘটতো,
আর যতই হোক, স্নেহ, আদর ও সম্মান থাকলে দাঙ্গা পরিস্থিতি এড়ানো তো যেত,
হিংসা ধর্মের নামে, ব্যক্তির নামে রোষ ছড়ায় তারা সংখ্যাতে খুবই অল্প,
প্রভাবিত হলেই তারা সফল, করদাতারা নিজেরাই নিজেদের সম্পদ উন্মোচনে ব্যস্ত,

অভিভাবকদের টাকা যেমন নিজের মনে করা হয়, তেমনই নিজেরই টাকা ওগুলো সরকারের,
নাগরিকদের টাকাতেই বেতন হয় সব নামকরা মন্ত্রী আমলাদের,
নাগরিকদের দেওয়া নাম আর তাদেরই দেওয়া বেতন,
ভাবুন তো, এই অনুভূতি সম্পূর্ণ জীবিত হলে কি অবস্থাটাই না হতে পারে এখন,

সুবিধে দিতে বাধ্য থাকতো, ভয়ের চোটে হতো উন্নয়ন,
প্রগতি ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি চলে আসতো, জাতির পড়েছে যে ডাক ও নয়ন,
কিন্তু আমরা উস্কানিতে চলবো, বাকিদের কথা ভাববো না,
ইংরেজদের নীতি আজও সফল, নজির রাখবো, শুধুই ভরবে ইতিহাসের পাতা,

চতুর্থ প্রজন্মের অন্তর্জাল আদপে বেশ কাজের,
ব্যবহারে সমস্ত তথ্য মুঠোবন্দি, সেটাও একনিমেষের বলে,
মানুষ খারাপ নয়, সমাজ নয় খারাপ, খালি খারাপ কিছু উদ্দেশ্য,
বাড়তে পারতো না ওরা যদি না পেতো এতটা লোভ আর গুরুত্ব,

ভাববেন অনেকে জ্ঞান দিচ্ছি, অভিজ্ঞ বক্তব্য ঝাড়ছি,
ভাবতেই পারেন তবে গরিব দেশ, তৃতীয় বিশ্বের দেশের তকমা বয়ে বেড়াবেন আর ক দিন?
খেতে পাই না, থাকতে পাই না, নেই নারী সুরক্ষা,
পাল্টাবে না কোনোদিন, যতই পার করি স্বাধীন বছরের পর বছর, শুধু অন্তহীন অপেক্ষা,

যুবসমাজ কর্মে বিশ্বাসী, সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী,
অর্থ ও ক্ষমতার অন্য মর্মে উপস্থাপনা রোখে তাদের, সরিয়ে আনে তাদের সত্তা থেকে কর্মী,
প্রত্যেক স্তরে কর দেন সবাই, কিন্তু আদায় করার বেলায় মুষ্টিমেয় কয়েকটি মানুষরূপী প্রাণী,
বলি দেওয়া নেওয়ার হিসেবগুলো কি সব সম্পর্কের মাঠেই দামি?

বন্ধু নির্বাচন হোক বা হোক সঙ্গী বা সঙ্গিনীর,
চাওয়া পাওয়ার হিসেব ষোল আনা, বাদ যায় না বরং উপরি পাওনা পেলে উপলব্ধি শান্তির,
একই জিনিস সমাজে নির্দ্বিধায় প্রশ্রয় দেয়,
সম্পর্করা নির্যাতিত কারণ তাদের আবেগী, দুর্বল ভাবেন তাই?

কাছের মানুষ ছেড়ে গেলে বেশ কষ্ট, চিকিৎসা করাতে গেলে মুখে ফোটে বুলি,
সমস্যা সমাধানের জন্য সমস্ত স্তরের মানুষেদের একটু প্রয়াস,
হয়তো পাল্টাতে পারে অবস্থা, পাল্টাতে পারে জীবনশৈলী,
ক্ষমাপ্রার্থী আবেগের সাথে তুলনার জন্য, কারণ ওটাকেই জীবনে সবচেয়ে দামি হিসেবে মানি।

উস্কানি আর শুনবো না, কেউ বোঝালে ভাববো কিন্তু বুঝবো না,
নিজের অভীষ্টের উদ্দেশ্যে সবাই তাদের মতো কথা বলেন,
কোনটা ঠিক নিজ যুক্তিতে ভাবুন, আলোচনার সঙ্গ কাঙ্খিত, অন্ধ প্রভাবনকে দেব বাদ,
প্রভাবিত করে মানুষকে ব্যবহার করার নীতি বেঁচে আছে, নিঃশাস নিচ্ছে ব্রিটিশ নীতি, দাঙ্গা ও বিদ্বেষের নামে আজ। 

1 thought on “বিদ্বেষ”

  1. রূঢ় বাস্তব স্যার। পারিপার্শ্বিক সমাজকে খুব সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এই লেখায়। আমার প্রণাম নেবেন।

    Like

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s