বিভ্রান্তি

বৃহত্তর কর্মসূচিতে নাম লিখিয়ে যেও,
পৃথিবীতে এসে, তুমি ছাপ ছেড়ে যেও,
ভাবনা স্বপ্নগুলো সম্পূর্ণ তোমার,
সামনে রেখে বাকিদের সাক্ষী করে যেও,

নির্মাণের সৃজন তোমার কল্পনাতে,
দৈনন্দিনের পাশে ভবিষৎ হাতড়াতে,
স্বল্প সময়, নেই অনন্তকালের ধৈর্য,
আজকের প্রজন্ম হাতে রাখে অন্তর্জালের চতুর্থ প্রজন্ম,

আবেগ পরিবার ও সম্পর্কের তকমাকরণ,
তারই অনুগামিতায় কাটে বছর তিরিশ কখন,
আয়নাতে যে মানুষটা রোজ তোমার সামনে আসে,
ভালোবেসেছো কখনো নাকি শুধুই খুঁজে গেলে তাকে?

যৌনতাকেন্দ্রিক আবেগের সময়সীমা রয়েছে,
আমি বলছি না প্রকৃতি বলেছে এ কথা সে কত কাল আগে,
তোমার সৌন্দর্য রয়েছে তোমার ব্যক্তিত্বে,
নিজের উপস্থিতির গুরুত্ব কি মৃত্যুর আগের দিন বুঝবে?

ভেবেছো হয়তো কখনো, পরিবার ছাড়া কে বা আর দুঃখী হবে,
আমার কিছু হলে পৃথিবীর কি বা যায় আসবে,
এতো জনসংখ্যার মাঝে নিজেই নিজের গুরুত্ব হারালে,
অন্য কেউ গুরুত্বের কারণ কিভাবে এসে খুঁজে পাবে?

স্বীকৃতি, সম্মান, নাম সবই তোমার আকাঙ্খিত,
কখনো ভেবেছো সবই কর্মকেন্দ্রিক আবেগের সাথে সম্পর্কিত,
কর্মকেন্দ্রিক বাসনা সম্পূর্ণ আবেগতাড়িত,
যা ছাড়া চাকরি, ব্যবসা, সম্পর্ক সমস্ত কিছুই মৃত,

নিজের পরিচিতি খুঁজেছো, উত্তর হয়তো ঠিক পাওনি,
বিমর্ষ হয়েছো কখনো, কিন্তু সঙ্গ সঠিকের হয়নি,
সমস্ত ধারণা মানুষের, তোমার কর্মই হলো পরিচিতি,
রাজনীতি, জাতি, ধর্মের অস্তিত্ব আছে, তার সাথে তোমার কাজের সম্পর্কটা ঠিক কি?

সমীকরণের সংজ্ঞায়িত হওয়ার প্রয়োজন যেমন রয়েছে,
সবচেয়ে কাছের মানুষটার জন্য সময় বরাদ্দের যথেষ্ট কারণ রয়েছে,
মন বসে না, ভালো লাগে না, এতো ভেবে কি হবে,
না ভেবে নিজের সাথে নিজেই জড়িয়ে যাচ্ছো না তো পেঁচে?

দোষারোপ করার অভ্যেসের জন্ম দিয়েছে পারিপার্শ্বিক,
উপরের লাইনটাই উদাহরণ অভ্যেসটা কতটা আন্তরিক,
অজান্তেই আজকাল ধারণার বিভ্রান্তির হয় যে প্রদর্শন,
কিন্তু দেখার মতন নেই মানুষ আর তার দৃষ্টিকোণ,

চতুর্থ প্রজন্মের অন্তর্জাল যদি তোমার ধৈয্য কাড়ে,
মনে রেখো, জীবনচক্রের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্যই প্রযুক্তির সৃষ্টি হয়ে থাকে,
সময় বাঁচিয়ে জীবনের কদর বাড়ানোই ছিল, এই প্রগতির পশ্চাতে যুক্তি,
চিন্তার সময় বেশি তাই চিন্তার সময় নাই, এটিই বোধয় এই প্রজন্মের সবচেয়ে বড় শাস্তি,

অনেকের মানসিক বিভ্রান্তির কারণ নাকি আজকের এতো তথ্য ও প্রযুক্তি,
এদিকে টেলিগ্রামে ফিরে যেতে বললে আরেকটি নতুন প্রয়োগের চাহিদার হয় উৎপত্তি,
ভারসাম্য বজায় রাখতে গিয়ে হারালে যদি মানব সংস্পর্শ আর বুৎপত্তি,
জীবনের চক্রে তুমি মরীচিকার সাথে বাধ্য হবে করতে সন্ধি,

শুধু বাস্তব জীবন বা দক্ষতাগত মাঠেই এর বিচরণ, এমনটা নয়,
এর দেখা তোমার মিলবে না এরকম একটা প্রাঙ্গন দেখাতে পারলে হয়,
পারিপার্শ্বিকের রচনা মানুষ নিজের হাতেই করে,
নিজ জীবনের ইতিহাস যদি একবার কেউ খুঁটিয়ে দেখে,

স্কুলের বিষয়গুলির প্রতি দীর্ঘদিনের বিতৃষ্ণা,
ওই বিষয়গুলোর প্রয়োগ সারাজীবন, ওমনি ভুলেছো সে শিক্ষা,
জীবনের প্রাঙ্গনের ইতিহাস, ভূগোল আর দর্শন,
হারিয়েছে সবাই, খালি স্থান পেলো জীবনবিজ্ঞান ও অভিজ্ঞতাহীন আবেগী বড়ো মন,

শারীরিক পুষ্টি ও বৃদ্ধি যেমন খাদ্যদ্রব্যের হাত ধরে,
ওমনি মানসিক বিকাশের প্রয়োজন যা আসে অনুপ্রেরণা ও নিজের প্রতি বিশ্বাসে,
নিজের কাজ ও কর্তব্য সম্পর্কে তোমার অস্পষ্টতা,
ভেবেছো কখনো, কি করতে চাও, বহন করতে চাও নিজের কোন সত্তা,

দোষারোপ দুর্বল ও বিকলাঙ্গদের প্রহরণ,
শক্তিশালীদের ক্ষনিকের ব্যবহারে পাল্টে ফেলো না মন,
অস্ত্রের মতো ব্যবহৃত হয় তা পরিবেশ ও পরিস্থিতির আড়ালে,
পরিকল্পিত ও মস্তিস্কচালিত কাজকর্মের সাথে নিজেকে নাহয় একটু যুক্ত রাখলে,

ধৈর্য্য নেই, লক্ষ্য নেই, স্বচ্ছতা নেই, আরো কত নেই এর রয়েছে তালিকা,
ভেবেছো কখনো এসবের মাঝে কত বড়ো তোমার ওই আছে এর তালিকা,
উদাসীনতা তোমার অভ্যেস, কাজ করাতে ক্লান্তি,
ক্লান্তি কাজ করলে আসে, বাকি সবই বিভ্রান্তি। 

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s