দক্ষতাকেন্দ্রিক শিক্ষা

বলে অনেকেই, শিক্ষাব্যবস্থা ডিগ্রি দেয়, দেয় না যোগ্যতা,
দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষার দাবি করে, টেবিলের ওপারে বসে ওরা,
পুঁথিগত শিক্ষা দেয় না সেরকম রুজি রোজগার,
কর্মহীনতার মাঝে সময় বলে ডিগ্রীগুলো শেষ করার কি ছিল দরকার?

সময় গেছে, অর্থ গেছে, গেছে পরিশ্রম,
চাকর হওয়ার ইচ্ছে ছিল, এখন দেখি চাকর হরেকরকম,
তাদের মাঝে নিজেকে বসাতে বিবেকে বেশ বাঁধে,
ডিগ্রীগুলো যোগ্যতার পাশে দূরত্ব বাড়িয়ে তোলে,

দূরত্ব শুধু এটুকুই যে, না জানা সমবয়সীরা অনেকেই আমার চেয়ে আজ বেশ ভালো,
এক সময় বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিলাম, ছোট ভেবেছিলাম তাদের বড়ো,
আজ আমি আর চলতে পারি না, ভাবি আমার কি হবে,
দক্ষতা ভিত্তিক কর্মের ছকটা কোনোদিন কষে দেখিনি বলে,

ভুল কিছুই হয়নি খালি ডিগ্রিকে বড়ো ভেবেছি,
তথাকথিত পরীক্ষাগুলিকেই সবকিছু আমি ভেবেছি,
পেশাগত পৃথিবীর চেহারা অন্যরকম, নিজ চিন্তার সাথে অমিল পেয়েছি,
নতুন করে এখন তাই দক্ষতার কথা আজ ভাবতে বসেছি,

নবপ্রজন্মের হাতে এখনও অনেক সময়, তা দেখতে আমি পাচ্ছি,
সাধারণ শিক্ষার সাথে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা খুঁজে পাচ্ছি,
ঘাটতি শুধু এটুকুই ছিল যাকে কিনা বলে দর্শন,
পঁচিশ বছরের জীবনকে ষাটের ঘরে দেখিনি তখন,

স্বউপলব্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণীকক্ষে,
নিজেকে নিজে চেনার দরকার জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপে,
বেশি বয়সে দেখছি আজ বাধ্য হয়েই তাই,
হতাশা নয় সমস্ত কর্মে আরেকটু শুধু শিখে যেতে যাই,

শেখার কোনো বয়স নেই, সময় নেই, খালি মানসিকতার প্রয়োজন,
কেউ কাউকে মারতে পারে না, নিজের দক্ষতার ওপর যার নজর সর্বক্ষণ,
দক্ষতাকেন্দ্রিক চিন্তা ও ব্যবহারিক জ্ঞানের কাল আসছে,
সবাইকে আজ তাই ভাবতে হবে, দক্ষতাকে কিভাবে আপন করবে,

মঞ্চে কেউই অভিনয় করতে চায় না, হাততাতলী ও স্বীকৃতি খালি পেতে চায়,
আরামদায়ক স্থানটা কিন্তু সর্বত্র দর্শকেরই হয়,
স্পটলাইটের উষ্ণতা স্পর্শ করে না ওখানে, মানুষ বেশ আরামেই বসে থাকে,
রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা সবাই, কেউ আগে বা কেউ পরে বুঝতে পারে,

স্বীকৃতি চাওয়া ও পাওয়ার মাঝে অনেক পার্থক্য,
সব মানুষই আসলে সমান, বাকিটা আইনি জটিলতা মাত্র,
কেউ কারো জন্য কিছু করে না, যার যতটা প্রাপ্য সে ততটা নিয়ে যায়,
দক্ষতার ঘাটতিতে স্বীকৃতি পরিবহনের দক্ষতাটি খালি হারিয়ে যায়,

দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা খালি একটি দর্শন মাত্র,
কারণ পুঁথিগত বিদ্যার অধ্যয়ন ও ক্রমাগত অনুশীলনই জন্ম দেয় দক্ষতার, নাম পাল্টে প্রশিক্ষণ,
অনেকের মাঝে বিশেষ পুঁথিকে চিনে নেওয়া শিক্ষার্থীর দৃষ্টিকোণ,
ক্রমাগত প্রদর্শিত পথ অনুযায়ী অনুশীলনের হাত ধরেই সম্ভব দক্ষ শিক্ষার্থীর অভিযোজন,

ছাত্রজীবনের চেয়ে পেশাগত জীবনের দৈর্ঘ্য অনেক বেশি,
দুশ্চিন্তা নয় কর্মদক্ষতামূলক নিজেকে করা প্রশ্নগুলো স্থান করুক প্রতিনিশি,
দোষারোপ নয় পাশাপাশি গড়ে উঠুক প্রতি শিক্ষার্থীর নিজ নিজ দক্ষতা,
পুঁথিগুলো তারই পাশে থাকুক, পুঁথির অধ্যয়ন ছাড়া সব দক্ষতাই যে বৃথা। 

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s