সমাজের মাঝে আমি

পবিত্র উৎসবে আজ অপবিত্র আমি,

মেনে নেওয়ার দল ছেড়ে আজ মানিয়ে নেওয়ার দলে আমি।

রাত নয় দিনের আলোতেই পৃথিবী দেখতে অভ্যস্ত আমি,

অবাধ্য নয়, সবার কাছে বাধ্য একটি চরিত্র, আমি।।

 

শান্ত, বাধ্য চরিত্রের ভিড়ে বারেবারে দেখেছি অবাধ্যতার মেলা,

শৃঙ্খলের মাঝেও যেন চলছে শৃঙ্খলঙ্ঘনের খেলা।

আমার আমিটাও যে একটা মানুষের চরিত্র, হয়ে গেছে তা ভোলা,

আমার অমিকে আগে রাখতে গিয়েই সৃষ্টি এই বাধ্যতার খেলা।।

 

শিশুরা খুব সুন্দর, কারণ নেই তাদের অনেককিছুই জানা,

স্নেহের পাত্র তারা, কারণ অনেক বড়ো তাদের নির্ভরশীলতার তালিকা।

শিশু বড়ো হলেই যত সমস্যা,

কারণ সে যে গড়ে তুলছে নিজেকে, মেলছে সে তার ডানা।।

 

বাধ্যতা লঙ্ঘিত আজ কৌতুহলের নাম নিয়ে,

কোথাও আবার লঙ্ঘিত স্বাধীনতার নাম করে।

অবাধ্য বলে দূরে সরিয়ে দেওয়া, সে আমার মনের মতো নয় বলে,

শৈশব থেকেই এ খেলা চলে, সবার প্রিয় হয়ে স্নেহ, আদরের বিনিময়ে।।

 

ভালো খারাপ, বাধ্য অবাধ্য তকমাগুলো খালি বেঁধে রাখতে চায়,

দৈত্বসত্তার জন্ম বোধহয় অন্যের মনের মতো করে চলার পরিবেশের হাত ধরেই হয়।

স্বীকার অস্বীকারে সবার চরিত্রের আকার গুলো পাল্টায় আর,

স্বাধীন, নিজস্ব মতের উপস্থাপন করা চরিত্রগুলো যেন কোথায় হারিয়ে যায়।।

 

বৃহৎ লড়াইয়ের জন্য ছোট স্বার্থের দিতে হয় বলি,

বড় হওয়ার যুদ্ধে এ কৌশল প্রায় সকলেরই।

ত্যাগ আর হারানোর যন্ত্রণাতে কাতরাচ্ছে আজ অনেকেই,

তাই বোধয় আজ তারাই দাসত্বের গল্প শোনায়,

কখনো স্বাধীন হয়ে নিজের মতো নিজেদের গড়তে চেয়েছিলো যে মুখগুলি।।

 

যুদ্ধে হারাতে হয় অনেককিছুই, মেনে নেওয়া তা কঠিন,

অনেকেই তাই মানিয়ে নেয় নিজেদের, এড়াতে বৃহৎ অশান্তি।

শান্তি চায়, সংঘাত চায় না এই চরিত্রগুলোর নেই রেহাই,

ওরাই তো যত অবলা, আমিত্বের কাছে খুব সহজেই হার মেনে যায় তাই।।

 

মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়ার লড়াই আদিকালের,

যুদ্ধ করার চেয়ে যুদ্ধের মানসিকতার বড্ডো অভাব যে।

নিজেকে সমৃদ্ধ করার লড়াই চলে সমান্তরালে,

নইলে হার নিশ্চিত, শুন্য থেকে শুরু করতে চাইনা যে।।

 

লড়াইতে ভুল হবে, শিখে নিয়ে আবার লড়বো,

যুদ্ধের রসদ অর্থ নয় মনোবল, মস্তিস্ককে বোঝাবো।

প্রত্যেকটি চরিত্রই যে স্বতন্ত্র, এই কথাটি মনে রোপন করবো আর,

মানিয়ে নিয়ে থমকে যাওয়া নয়, মেনে নিয়ে আরো এগিয়ে আমি যাব।।

 

সবাই এসে ভাঙতে চাইবে, করতে চাইবে তাদের মতো,

লড়াইটা ব্যাক্তিত্বের, কিছু শিখে এগিয়ে যাবো তখন।

কেউ আবার চাইবে না পাল্টাতে হতে চাইবে অনুগামী,

চলার পথে সঙ্গে নেবো তাদের , মিলে মিশে কিছু মুহূর্তকে করবো অনেক দামি।।

 

মানিয়ে নেওয়া দুঃখমূলক, নেই এতে আনন্দের ছোঁয়া,

দূরে তাই সরিয়ে রাখতে চাই, মনের আনন্দে সম্পূর্ণ করতে চাই এ মানবরূপী জীবনযাত্রা।

মনোকষ্ট দেওয়া ও তা ভোগ করা সবচেয়ে বড় অন্যায়,

বিরত রাখবো নিজেকে, নিজেকে ও অন্যদের সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে।।

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s